সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

বাংলা সাহিত্য । প্রবন্ধের পাতা : গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ

ঊনবিংশ শতাব্দীতে সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও নারী সমাজের অংশ গ্রহণ

লিখেছেন সুতপা ভট্টাচার্য : সমাজ সংস্কার আন্দোলন ও নারী সমাজের অংশ গ্রহণ  সুতপা ভট্টাচার্য লিখেছেন  সুতপা ভট্টাচার্য : ঊনবিংশ শতাব্দীতে যে সমাজ সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল সেই আন্দোলনে মহিলাদের ভূমিকা থাকলেও আন্দোলনের মূল স্রোতে ছিলেন পুরুষরা। এই আন্দোলন আদেও নবজাগরণ কিনা তা নিয়ে ঐতিহাসিক মহলে প্রবল বিতর্ক আছে। বিনয় ঘোষ এই নবজাগরণকে ‘অতি-কথা’ বলে চিহ্নিত করেছেন। সুশোভন সরকার তার Notes on Bengal Renaissance গ্রন্থে এবং পরবর্তীকালে একাধিক প্রবন্ধে এ বিষয়ে তার মন্তব্য রেখে গেছেন। তবে ঊনবিংশ শতাব্দীর এই সংস্কার আন্দোলন ‘নবজাগরণ’ বা ‘রেনেসাঁস’ কি না সে বিষয়ে বিতর্ক থাকলেও তা যে সমাজের গভীরে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছিল সে বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই। সাধারণ ভাবে ধরে নেওয়া হয় এই আন্দোলনে পুরুষরাই ছিলেন মূল চালিকাশক্তি এবং আন্দোলনের কর্মস্রোতে মহিলারা ছিলেন নিতান্তই নিষ্ক্রিয়। সম্ভবত তাদের নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্ক সম্বন্ধে তারা ছিলেন সম্পূর্ণ অনবহিত। আসলে সমাজ সংস্কারকেরা মহিলাদের সঙ্গে তাদের নিজেদের বিষয়ে আলোচনা করার তে
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

ভারত বিভাজন ও হিন্দু মুসলিম সাম্প্রদায়িকতা : কার দ্বায় কতটা?

আলী হোসেন ভালো-মন্দ যাহাই আসুক সত্যরে লও সহজে - কথাটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। কিন্তু কথাটার উত্তরাধিকার শুধু বাঙালি নয়, শুধু ভারতীয় নয়, ছড়িয়ে আছে বিশ্বময়। তাই আপনি বা আমি সবাই তারই অংশ। অর্থাৎ আমাদের জন্যও কথাটা স্মরণযোগ্য। সত্যকে মেনে নেয়ার ক্ষমতা সবার থাকে না। অনেক বড় মনের মানুষ হতে হয় তার জন্য। হৃদয়ের ভিতরের আয়তনটাও অনেক বড় হওয়া দরকার। তবেই সেই সত্যকে সহজে নেওয়া যায়। শ্রদ্ধেয় অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তেমনি একজন বড় হৃদয়ের মানুষ। যে-হৃদয় সত্যকে সহজে গ্রহণ করার শক্তি অর্জন করেছে। বলেছেন,  'তবে একটা জিনিস খুব চোখে পড়তো, মুসলিমরা যত হিন্দুদের বাড়ি যেতেন, হিন্দুরা তত যেতেন না মুসলমানদের বাড়ি। সে দিক থেকে আমি বলব, হিন্দুরা অনেক বেশি সাম্প্রদায়িক। এখন তারই উগ্র চেহারা দেখতে পাচ্ছি।' আপনার সে শক্তি কি আছে এই সত্যকে স্বীকার করে নেওয়ার? কিন্তু থাক বা না থাক, আপনার ক্ষমতার উপরে বা শক্তির উপরেই তো শুধুমাত্র সত্য নির্ভরশীল নয়। তার নিজস্ব একটা শক্তি আছে। সে শক্তিকে আত্মস্থ করার মতো ক্ষমতা সবার হয় না, বলা ভালো থাকেনা। তাকে অর্জন করতে হয়। 

রাহুল মজুমদার

নেশা ও পেশা জীবনধারণের জন্য মানুষের প্রয়োজন অন্ন, বস্ত্র আর আবাস| এগুলি মিটলে তারপর প্রয়োজন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের| কিন্তু এই সমস্তই মানুষের নিত্য প্রয়োজনগুলি মেটায়| খাদ্য ও বাসস্থান পশু পাখিরও প্রয়োজন হয়, কিন্তু যেহেতু মানুষ পশু পাখিদের থেকে বেশী সভ্য তাই তার বস্ত্রও প্রয়োজন হয়| দেহের নগ্নতাকে ঢাকার জন্য যেমন বস্ত্র প্রয়োজন তেমনি মনের পাশব বৃত্তিগুলিকে দূর করার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা| আর শরীর অসুস্থ হলে তার জন্য প্রয়োজন চিকিৎসা| তাই এই সমস্ত কিছুই মানুষের মানুষের মত বাঁচার উপকরণ| কিন্তু মানুষের শুধু শরীর নেই তার মনও রয়েছে, তাই তার খোরাকেরও প্রয়োজন| কিন্তু এই খোরাক কোন বস্তু নয়, যাকে উদরস্থ করে ক্ষুন্নিবৃত্তি করা যাবে| মানুষ এই খোরাক পায় সাহিত্য সংস্কৃতি ইত্যাদি থেকে| এখন সাহিত্য সংস্কৃতি মূলত দুধরেনের হয় – একটি হল বাজার চলতি এবং দ্বিতীয়টি নিখাদ আনন্দলাভের জন্য| আবার সাহিত্য সংস্কৃতি ইত্যাদির একটা বাজারও রয়েছে যেখানে এগুলি পণ্য হিসাবে বিক্রি হয়| অর্থাৎ সাহিত্য সংস্কৃতি একই সঙ্গে মনের আনন্দ এবং জীবিকা দুটিরই ব্যবস্থা করতে পারে| বহু মানুষ রয়েছেন যাঁদের কাছে এগুলি জীবিকা বা গ্রাসাচ্ছাদ

প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় পর্ব

প্রবীর চট্টোপাধ্যায় অশিক্ষা, কুসংস্কার, বর্ণবৈষম্য ব্রাহ্মণ্যবাদের সৃষ্ট বিষবৃক্ষ। ( ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রবন্ধের আজ দ্বিতীয় পর্ব।  প্রথম পর্ব এখানে   ) ইহলোকেই পরলোক। উত্তরসমাজ, উত্তরসুরীদের মধ্যেই তোমার পরলোক নিষিক্ত। ইহলোকের যাবতীয় কর্মের প্রতিক্রিয়া বহন করে তোমার রক্তের ঔরসজাত সন্তান-সন্ততিদের শিরা-ধমনীতে। তোমারই সংস্কৃতি, ইন্দ্রিয়পরায়ণতা গড়ে তোলে তাদের। এতে করে তারা সুখী, মানবিক হলে তোমার স্বর্গীয় সুখাবাস। তোমারই সংকীর্ণ মানসিকতা, পশ্বাচার তোমার উত্তরপুরুষকে নীচে নামিয়ে নরক সৃষ্টি করলে , তোমার অস্তিত্বও সেই নরকযন্ত্রনা ভোগ করবে। তাই, বলা যায় তোমার স্বর্গ-নরক তোমার তৈরি, তোমার জীবনেই তাকে ভোগ করে যেতে হবে। 

প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। প্রথম পর্ব

অনার্য সংস্কৃতিকেও উদরস্থ করে গড়ে ওঠে এই ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি- আর্যব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতি যখন অনার্য সংস্কৃতি অর্থাৎ আর্য সৃষ্ট তথাকথিত শূদ্র সংস্কৃতি আত্মসাত করতে শুরু করল, তখন অনার্যদের নাগ পূজা, প্রকৃতি পূজা, চাণ্ডী পূজা, সবকিছুর মধ্যে ব্রাহ্মণ্য আচার পদ্ধতি মিশিয়ে অনার্য সংস্কৃতিকেও উদরস্থ করতে লাগল। যিনি আর্য দলপতি ও দেবতা সম্মানে মান্য হতেন, সেই ইন্দ্রকে দুই বার যুদ্ধে পরাজিত করেন যে অনার্য বীর,সেই শ্রীকৃষ্ণের হাত থেকে এই আর্যদের গুরু হিসাবে কথিত ঋষি বৃহস্পতির মধ্যস্থতায় প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে যান । সেই কৃষ্ণ'কেও দেবতা হিসেবে গ্রহন করেন আর্যব্রাহ্মণেরা।

মুর্শিদ এ এম

জীবন ডাকে বারবার একজন সুস্থ মানুষ যতদিন এই ধরার বুকে থাকে, ততদিন তার মগজে এই অনিবার্য সত্যের সন্ধান থেকে রেহাই নেই—সে কেন বেঁচে আছে? যুগে যুগে এই প্রশ্নটি যেমন সৎ মানুষকে বিব্রত ও পীড়িত করেছে, তেমনি এর সমাধানেও প্রচুর সময় ব্যয় হয়ে আছে। জীবনের সঙ্গে জন্মের যোগ অঙ্গাঙ্গি এ আর নতুন কথা কী। জন্ম আদতে এক সূক্ষ্ম অথচ জটিল প্রাকৃতিক ক্রিয়া। তবু একে ঘিরে নানা প্রশ্ন, নানা সংস্কার, নানা জল্পনা। বেঁচে থাকা এই জন্মের এক বিস্তৃত অনিবার্য রূপ। যা ক্রমশ আরেক অনিবার্যতার দিকে ধাবিত করে, যাকে আমরা সহজভাবে মৃত্যু নামে বুঝি। এই দুই প্রাকৃতিক ক্রিয়া যাবতীয় দৃশ্যমান কিংবা কিছু অনুভূতিমান বস্তু কিংবা বস্তুগুণের প্রমাণসাপেক্ষে আমরা বুঝে থাকি। অথচ কোনো কোনো মতবাদ ইজম সংস্কার একে জটিলরূপে দেখতে বা নীরিক্ষা করতে চায়। যেমন কেউ কেউ জন্মকে আরেক বিগত জন্মের সাপেক্ষে এই ধরাধামে প্রবেশের ছাড়পত্র হিসেবে প্রতিভাত করতে চায়। তাঁদের মতবাদ মনে করে কিংবা বিশ্বাস করে, বিগত জন্মে সৎ বা অসততার সঙ্গে ইহজন্মের ভালোমন্দ জড়িত। তাহলে এক অতি সাধারণ প্রশ্নের উত্তর চাওয়া যায়, বিগত জন্মের প্রমাণ কোথায়? সেটির সময়কাল বা তারি

আমার জাদুবাস্তবতা - মলয় রায়চৌধুরী

আমার জাদুবাস্তবতা - মলয় রায়চৌধুরী শৈশবে ও তারুণ্যে পশ্চিমবঙ্গের যে বাস্তব জগতের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল, যাকে আমি চোখ বুজে আজও মগজের ভেতরে স্পষ্টভাবে উদ্ভাসিত করতে পারি, যে-আইডিলিক বাস্তব জগতে আমি আর বোনভাইরা লন্ঠনের আলোয় বসে বড়োজেঠিমার কল্পকাহিনীগুলোকে, যেগুলো উনি রামায়ণ, মহাভারত, পঞ্চতন্ত্র, আরব্য রজনী,ঠাকুমার ঝুলি, ঈশপের ফেবল ইত্যাদির কাহিনিকে মিলিয়ে-মিশিয়ে নিজের মতন করে আমাদের শোনাতেন, সেই কাহিনিগুলো উত্তরপাড়া কোন্নোগর গরলগাছা পাণিহাটি নিমতা ইত্যাদি তখনকার গ্রামে প্রতিস্থাপিত করতে পারতুম, লিখতে আরম্ভ করে দেখলুম যে সেই বাস্তবকে অপসারিত করে দিয়েছে সম্পূর্ণ আলাদা ধরণের আপাত-অবাস্তব, বাস্তব ঘটনাবলি, যা ঘটিত ঘটনা, মগজের ভেতরে ছবি তৈরি করে ভাবলে মনে হয় অবিশ্বাস্য, অসম্ভব, শিউরে ওঠার মতন অনেক সময়ে। আমার শৈশব কেটেছে অতিদরিদ্র নিম্নবর্গীয় হিন্দুদের, সেসময়ে যাদের বলা হতো অন্ত্যজ, ও গরিব শিয়া মুসলমান অধ্যুষিত পাড়া পাটনার ইমলিতলায়, যার বাসিন্দাদের অভিজ্ঞতায় ছিল অতিবাস্তবতার, অসম্ভাব্যতার, সাংস্কৃতিক অনুমানসমূহের, মিথের, সামাজিক কিংবদন্তির বাস। তাদের নৈতিকতায় বাইনারি অপোজিটস বা যুগ্ম বৈপরীত্যের