সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। দ্বিতীয় পর্ব

প্রবীর চট্টোপাধ্যায়

অশিক্ষা, কুসংস্কার, বর্ণবৈষম্য ব্রাহ্মণ্যবাদের সৃষ্ট বিষবৃক্ষ।
( ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রবন্ধের আজ দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্ব এখানে  )

ইহলোকেই পরলোক। উত্তরসমাজ, উত্তরসুরীদের মধ্যেই তোমার পরলোক নিষিক্ত। ইহলোকের যাবতীয় কর্মের প্রতিক্রিয়া বহন করে তোমার রক্তের ঔরসজাত সন্তান-সন্ততিদের শিরা-ধমনীতে। তোমারই সংস্কৃতি, ইন্দ্রিয়পরায়ণতা গড়ে তোলে তাদের। এতে করে তারা সুখী, মানবিক হলে তোমার স্বর্গীয় সুখাবাস। তোমারই সংকীর্ণ মানসিকতা, পশ্বাচার তোমার উত্তরপুরুষকে নীচে নামিয়ে নরক সৃষ্টি করলে , তোমার অস্তিত্বও সেই নরকযন্ত্রনা ভোগ করবে। তাই, বলা যায় তোমার স্বর্গ-নরক তোমার তৈরি, তোমার জীবনেই তাকে ভোগ করে যেতে হবে। 
আজকের সমাজের সঙ্কটগুলিকে যতই ধর্মীয় বিভক্তিতে কুসংস্কারের অন্ধকারে চাপা দেওয়ার চেষ্টা হোক না কেন। সবাই জানে এই ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ অন্য গ্রহ থেকে আসেনি । আর্যব্রাহ্মণেরা ব্যভিচার ও সংকীর্ণতার মধ্যে দিয়ে বাধ্য করেছিল ধর্মান্তরিত হতে,এমনকি বিধর্মীদের সঙ্গে রক্তমিশ্রণ ঘটাতে। ঠিক যেমন, বর্তমানেও পরিলক্ষিত হয় - বামপন্থী থেকে দক্ষিণপন্থী। 

অশিক্ষা, কুসংস্কার, বর্ণবৈষম্য ও ধর্মভাগ ব্রাহ্মণ্যবাদের সৃষ্ট বিষবৃক্ষ। ধর্ম-বর্ণ দোহায়েতে জানতে দাওনি শাস্ত্রের উচ্চজ্ঞান। প্রতিটি বস্তুর অনু পরমাণু কণাতে রয়েছে প্রকৃতির অতুলশক্তি। শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান যাকে বলল ঈশ্বরকণা। সংকীর্ণ স্বার্থে বিবাদ বাঁধিয়ে রেখে দিলে ঈশ্বর আল্লাহ ভগবানে। 


আমরা প্রত্যেকে নিজেদের সম্পর্কে বড় উচ্চ-ধারণা পোষণ করি। 

শব্দের উৎপত্তি, যাপনের অন্তস্থলে। প্রকৃতি থেকে প্রথম ঋণ নিয়ে ছিলাম উচ্চারণ ।এরপর প্রতিদিনের যাপনে তার বেড়ে ওঠার পুষ্টিলাভ । 

আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সাহিত্য জগতের সঙ্গে যুক্ত না হলে, এই অভিজ্ঞতা হোত না। অধিকাংশ পি.এইচ.ডি. না হয় অধ্যাপক, এমনকি শিক্ষক বা সমাজে উচ্চতর অবস্থানের দাবীদার অথবা দার্শনিক কিম্বা স্রষ্টা,কিন্তু তাঁদের জীবনযাত্রার স্তর , তাঁদের সংস্কৃতি , তাঁদের রিপু-তারণাজনিত হতাশা প্রসবিত বর্জ্য হতে বিকশিত হয় তাঁদের অন্তরতম ভাষা-লেখ্য-উচ্চারণ এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিগুলি। আর্তনাদগুলি খনন করে যায় তাঁদের সামাজিক অবস্থান ও বিকারের পরিচয়লিপি ইতিহাসলিপি হিসেবে । যা বর্তমান সময়কাল ও সমাজ-সংস্কৃতির ইতিহাস বহন করবে উত্তরকালের জন্য। ইতিহাস বড় নির্দয়, তাই কালের স্বাক্ষর রেখে যায়। 

এ বিষয়ে আলোচনায় কেহ-কেহ এমন মন্তব্যও করে থাকেন- আমি বস্তুবাদী, আজকের জীবনকে পূর্ণমাত্রায় ভোগ করে যেতে চায়। কাল যখন থাকব না, তখনকার কথা আজ ভেবে, বর্তমান উপভোগে বঞ্চিত হব কেন? ' 

তাদের সবাইকে সবসময় বলি - যদি এ ভাবেই বৃক্ষ ভাবতো, মাটি ভাবতো, সমস্ত প্রাণীকুল ভাবতো অর্থাৎ এক কথায় সমস্ত প্রকৃতি ভাবতো? তাহলে এই কয়েক কোটি বছর ধরে পৃথিবীর প্রাণের সঞ্চালনের অস্তিত্ব থাকতো? এ ভাবেই চিন্তা করেছিল হরোপ্পা-মহেঞ্জদারো যুগের রাজনকুল। তারপরের ইতিহাস আমরা পড়েও শিক্ষা নেইনি। তাই, আর্য শক হুণ মোঘল পাঠান পর্তুগিজ ইংরেজ আমাদের পূর্বপুরুষদের উপস্থিতিতে মাতৃকুলের গর্ভে তাদের বীর্যে সৃষ্টি করে গেছে এই সংকরকুল। 

আজ আমরা পাওয়া না পাওয়ার যা কিছু অভিশাপ বহন করছি, তা আমাদের পূর্বপুরুষের দান । আমাদের পূর্বপুরুষগণ দেখে গেছেন তাঁদের বিষবর্জ্যে আমাদের বিকৃত হতে। এটা ছিল, তাঁদের শেষদশায় অর্জিত হতাশা। এর থেকে উদ্ধারের পথও তো, সেই পূর্বপুরুষদের অনেকে রেখে গেছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকেই । তবে সেই পথ পরিত্যাগ করে ক্রমশ বর্জ্যের অতলে নিমজ্জিত হব কেন ? কেন আমাদের সন্তান-সন্ততিদের জন্য একটি সুন্দর সুস্থ প্রকৃত মানবিক জীবনের পথ রেখে যাব না। পরিবর্তে সৃষ্টি করে যাব বিকলাঙ্গ, আমারই উত্তর সমাজ-সন্ততিকে ! 

যাঁরা এই সমাজ উত্তরকালের কথা চিন্তা করতেন, তাঁরা আজও নক্ষত্র হয়ে দিকদর্শন দিয়ে চলেছেন । তাই, তাঁদের আজও মহর্ষি বলি । আবার প্রত্যক্ষ করে চলেছি, অসুর-রাক্ষস রাজদর্শন আজও ভয়ংকর ভাবে সমাজের অজ্ঞান সমুদয়কে নিমজ্জিত করে রেখেছে বা প্রভাবিত করে চলেছে। আমরা প্রত্যেকে নিজেদের সম্পর্কে বড় উচ্চ-ধারণা পোষণ করি।এই পশ্বাচার থেকে আসুন আমাদের উত্তরকালকে বাঁচায়। সমস্ত রকম আত্মশ্লাঘা, আত্মগ্লানি পরিত্যাগ করে ক্রমশ আত্মশুদ্ধির যোগসাধনায় নিরন্তর নিরবিচ্ছিন্ন আত্মমুক্তির পথ প্রশস্ত করি। 


ভারতের মানুষ আপন আপন সংস্কারগত, জিনগত কারণে নিজ- নিজ বিশ্বাস থেকে নানা আঞ্চলিক ভাষা-ধর্মের মধ্যেও একজাতি একপ্রাণ। আজ প্রায় একশত ত্রিশ কোটি মানুষ নৃতত্ত্ববিজ্ঞানগত ভাবে একজনও দাবী করতে পারবে না কোনো মৌলিক রক্তের বা জিনের। আর সেই কারণে ভারতীয়জাতি মিশ্ররক্তজাত, সারাবিশ্বের মহৎগুণ আত্মস্থ করে বিশ্বের একটি মহান জাতি । যুগ যুগ ধরে ভারতীয় দর্শন ও ধর্ম, প্রেম ক্ষমা ও ত্যাগের। কিন্তু পাপ অধর্ম নাশে ক্ষমাহীন দূর্জয় দূর্দম। 


''চৌদ্দ ভুবন ধ্বংস হ'লে / আসমানেতে বানায় ঘর / প্রেমিকের স্বভাব স্বতন্তর।'' 

তন্ত্রমতে রা মানে জগৎ, ধা অর্থে ধারণ বা ধারক। যাকে প্রকৃতি বলে জানি ।আবার রাম নামও প্রতীক। যেমন রা অর্থে জগৎ হলে, ম অর্থে ব্রহ্ম,অর্থাৎ পরমজ্ঞান। কৃষ্ণ, কালো অর্থাৎ আঁধার। মানে সাত রং যেখানে অনুপস্থিত , সেই সময় বা কাল। সূর্যালোকের সাত রং প্রকৃতিকে উজ্জ্বলসাদা করে তোলে, তাই রাধা ফর্সা বা সাদা। কারণ, সাত রং যেখানে বর্তমান,তা সাদা বর্ণ। এ সবই ঋষিদের কাব্যভাব প্রতীকী প্রকাশ । এই কারণে রত্নাকর থেকে বাল্মীকি হতে সাধনা শুরু করে ছিলেন 'মরা-মরা' জপ করে। বাকিটুকু 'বুঝেনে মন ঠারে-ঠোরে'। শুধু রাধাকৃষ্ণ আর রাম নাম জপে গেলেই হবে না। অন্তঃস্থলে পৌঁছুতে হবে। সেই জন্য চাই চর্চা-গবেষণা । 


আমরা প্রত্ন-গবেষণার মধ্যে দিয়ে জানতে পেরেছি যে, আর্য-যাযাবর সৃষ্ট সংকরপ্রজাতি যারা পরবর্তীকালে নিজেদের যজ্ঞকর্মের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবর্ণ বলে সমাজের শিখরে স্থান করে নেই, তাদের পূর্ব-পুরুষগণ সিন্ধু উপত্যকায় পৌঁছানোর কয়েক হাজার বছর পূর্ব থেকে অর্থাৎ নবপ্রস্তর যুগের কৃষি ব্যবস্থার সময় থেকে যোনি-লিঙ্গ পূজা আচার পদ্ধতি চালু হয়ে ছিল। যার থেকে উৎপত্তি শিব-শক্তি বা তন্ত্রধর্ম। 

তন্ত্রধর্মের উৎপত্তি সম্বন্ধে নানা মত প্ৰচলিত আছে। ব্রাহ্মণরা বলেন যে, তন্ত্রধর্মের বীজ বৈদিক ধর্মের মধ্যেই নিহিত ছিল। আর, বৌদ্ধরা দাবী করেন যে, তন্ত্রের মূল ধারণাগুলি ভগবান বুদ্ধ যে সকল, মুদ্রা, মন্ত্র মণ্ডল, ধারণা, যোগ প্রভৃতির প্রবর্তন করেছিলেন তা থেকেই উদ্ভূত। প্রকৃত পক্ষে ব্রাহ্মণ ও বৌদ্ধগণ তন্ত্রধর্মকে বিকৃত করেছিল। মনে হয় তন্ত্রধর্মের আসল উৎপত্তি সম্মন্ধে সূত্ৰকৃতঙ্গ’ নামে এক প্ৰাচীন জৈনগ্রন্থ বিশেষ আলোকপাত করে । এটা সকলেরই জানা আছে যে, তন্ত্রের আচার-অনুষ্ঠান ও পদ্ধতি অত্যন্ত গূঢ় এবং উক্ত প্ৰাচীন জৈনগ্রন্থ অনুযায়ী গূঢ় সাধন পদ্ধতি শবর, দ্রাবিড়, কলিঙ্গ ও গৌড় দেশবাসীদের এবং গন্ধৰ্বদের মধ্যেই প্রচলিত ছিল। মনে হয় এই জৈন গ্রন্থের কথাই ঠিক, কেননা, তান্ত্রিক সাধনসদৃশ ধৰ্মপদ্ধতি পূর্ব ভারতের প্রাক্‌-বৈদিক জনগণের মধ্যেই প্রচলিত ছিল এবং উহাই ‘ব্রাত্যধৰ্ম’ বা অনুরূপ কোন ধর্ম হবে । পরে বৌদ্ধ ও ব্ৰাহ্মণ হিন্দুরা যখন উহা গ্রহণ করেছিল, তখন তারা দার্শনিক আবরণে তাকে মণ্ডিত করেছিল । প্ৰায় শতবছরের আগে এ সম্বন্ধে বক্ৰেশ্বরের বিখ্যাত তান্ত্রিক অঘোরীবাবা যা বলেছিলেন তাও এখানে প্ৰণিধানযোগ্য। তিনি বলেছিলেন- “বেদের উৎপত্তির বহু শতাব্দী পূর্বে তন্ত্রের উৎপত্তি । তন্ত্র মন্ত্রমূলক নয়, ক্রিয়ামূলক । অনার্য বলে আর্যরা যাদের ঘৃণা করতেন, সেই দ্রাবিড়দের ভাষাতেই তন্ত্রের যা কিছু ব্যবহার ছিল । পুঁথিপুস্তক তো ছিল না, বেদের মতই লোকপরম্পরায় মুখে মুখে তার প্রচার ছিল । সাধকদের স্মৃতির মধ্যেই তা বদ্ধ ছিল । তার মধ্যে ব্ৰাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র জাতির নামগন্ধও ছিল না। কারণ, তন্ত্রের ব্যবহার যে-সব মানুষকে নিয়ে, তার মধ্যে জাত কোথায় ? সাধারণ মানুষের ধৰ্মকৰ্ম নিয়েই তো তন্ত্রের সাধন । তন্ত্রের জগতে বা অধিকারে ঘৃণার বস্তু বলে কিছুই ছিল না । শবসাধন, পঞ্চমুণ্ডি আসন, মদ্য-মৎস্য-মাংসের ব্যবহার এ সবই তো তন্ত্রের, আর্যব্ৰাহ্মণদের ধারণায় ভ্ৰষ্টাচার । তথাকথিত শুদ্ধাচারী ব্ৰাহ্মণরা যতদিন বাঙলায় আসেন নি, ততদিন তাঁদের এ ভাবের যে একটা ধর্ম সাধনা আছে, আর সেই ধর্মের সাধন প্রকরণ তাদেরই একদল গ্রহণ করে ভবিষ্যতে আর একটি ধর্ম গড়ে তুলবেন, একথা তারা কল্পনায়ও আনতে পারেন নি। তারপর তন্ত্রের ধর্ম গ্রহণ করে ক্রমে ক্রমে তারা অনার্যই হয়ে পড়লেন–তাঁদের বৈদিক ধর্মের গুমোর আর কি রইল ?” (প্ৰমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়, “তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ”)। 

যথেচ্ছ নারীসঙ্গমের ব্যভিচারে শাস্ত্রজ্ঞানচর্চা রহিত বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য সম্প্রদায়, তন্ত্রধর্মকে বিকৃত করে, এক বিশাল সংকর শ্রেণীর জন্ম দেয়। অনার্যদের শক্তি পূজা ও তন্ত্রাচারকে আত্মস্থ করতে গিয়ে সমাজে এই বিভ্রাট ঘটায়। যার স্বাক্ষ বহন করছে খাজুরাহ,অজন্তা,ময়নামতি,পাহাড়পুরের শিল্পকর্ম ও বৌদ্ধ-ব্রাহ্মণ্য সাহিত্য। 

-----------------------

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বুলবুল আহমেদ

সংস্কৃতির নিঃসঙ্গ পথিক মন তুমি কৃষি-কাজ জাননা, এমন মানব জমিন রইল পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা। --- রাম প্রসাদ সেন মানব-জনমে ফসল ফলে না নানা কারনে, সোনা ফলা অনেক পরের ব্যাপারে। সবচেয়ে বড়ো প্রতিরোধের সৃষ্টি করে সামাজিক ও রাষ্ট্রিক প্রতিবেশ। সেখানে মননের অভাব, প্রীতির অভাব, প্রেমের অভাব, বন্ধুতার অভাব সংযমের অভাব, সবচেয়ে বড় অভাব আত্মমর্যাদার। আর এতগুলো না-থাকা জায়গা করে দেয় নিখিল নিচতা, শঠতা, সংকীর্ণতা ও স্বার্থপরতার জন্য। নিজের জীবনে মানুষের অবাধ অধিকার। জগৎকে মেরামত করে এইসব হীনবৃত্তি দূর করার চেয়ে নিজেকে সংশোধন করা অধিক প্রয়োজন। এই কাজে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রয়েছে সংস্কৃতি চর্চার। ধর্ম নয়, রাজনীতি নয়, মতবাদী নয়, মুক্তির পথ দেখায় সংস্কৃতি –  মানুষ নিজেকে খুঁজে পায়। এই কথা বলেছেন মোতাহার হোসেন চৌধুরী (১৯০৩- ৫৬) একান্ত নিভৃতে ‘সংস্কৃতি-কথা’ প্রবন্ধ সংকলনে। তাঁর ভাবনার আকাশে মেঘের মত ছায়া ফেলেছেন ক্লাইভ বেল ও বার্ট্রাণ্ড রাসেল। তিনি আমাদের শুনিয়েছেন শুভবোধের, নিরঞ্জন বুদ্ধির, উচ্চকিত যুক্তির ও ব্যক্তিপ্রত্যয়ের কথা।

আবদুল হক

একজন গোবিন্দ দেব ও তাঁর নীরবতা দিবস গোবিন্দচন্দ্র দেব কেবল পণ্ডিত ও দার্শনিক ছিলেন না, জীবনযাপনে আক্ষরিক অর্থেই তিনি ছিলেন একজন পরহেযগার মানুষ। নীরব ধ্যানী, নিবিষ্ট চিন্তক, নিভৃত সাধক। আমরা কেউ পুণ্যবাদী, কেউ পুঁজিবাদী। তিনি এ দুয়ের বাইরে গিয়ে, উর্ধে উঠে, হয়েছিলেন মানুষবাদী।

সত্যরঞ্জন বিশ্বাস

প্রেক্ষিত চড়কঃ মুসলিম ও অন্যান্য অনুষঙ্গ বর্ষশেষের উৎসব হিসাবে ‘ চড় ক ’ বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি লোকোৎসব। গ্রামবাংলার নিম্নবর্গীয় শ্রমজীবি মানুষেরাই চড়ক উৎসবের মূল হোতা। দরিদ্রদের এই মহোৎসবকে বসন্তোৎসব হিসাবেও গণ্য করা যায়।